অর্থনীতি ডেস্ক: বাংলাদেশ থেকে বিদেশি অ্যাপস নন-ফাঞ্জিবল টোকেন এনএফটি’র মাধ্যমে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে আউটসোর্সিংয়ের নামে অনুমোদনহীন অর্থ পাচার ও স্থানীয় অফিস গড়ে তোলায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে তাদেরকে আদালতে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে তা জানিয়েছে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ। এর আগে শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাতে উপজেলার পৌরসভার ফার্মগেট এলাকায় যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে অ্যাপসটির প্রতিনিধিসহ ৩ জনকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন, কাবুল ইসলাম (৩০), আবু সাঈদ মিয়া (৪৭) ও আরিফুল ইসলাম (৩০)। এদের মধ্যে কাবুল ইসলাম নীলফামারীর ডোমার থানার খাটুরিয়া গ্রামের মৃত মনতাজ আলীর ছেলে, আবু সাঈদ মিয়া টাঙ্গাইলের সখীপুর থানার মুচারীয়া গ্রামের মৃত সামসুদ্দিনের ছেলে ও আরিফুল ইসলাম নাটোরের বড়াইগ্রাম থানার গোপালপুর পুর্বপাড়ার শহিদুল ইমলামের ছেলে।
জানা যায়, নীলফামারীর কাবুল দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইনে বিভিন্ন উপায়ে আউটসোর্সিংয়ের নামে এনএফটির (নন ফাঞ্জিবল টোকেন) প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন। এটির মাধ্যমে সে দেশের বিভিন্ন এলাকার প্রায় প্রায় কয়েক শতাধিক গ্রাহক তৈরি করে দেবীগঞ্জের ফার্মগেট এলাকায় বাজারে অফিস উদ্বোধন করেন তিনি। অনুমোদনহীন অ্যাপসের প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠার বিষয়টি গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরে দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের সেনাবাহিনী পুলিশকে নিয়ে রাতে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় অফিস থেকে স্থানীয় প্রতিনিধি কাবুলসহ তিনজনকে আটক করা হয়। সাধারণ মানুষকে যাতে এর মাধ্যমে প্রতারণা করতে না পারে সে কারণে অভিযান চালানো হয়।
আটককৃত আরিফুল ইসলাম জানায়, কয়েকদিন আগে আমরা পরিবারসহ বন্ধুরা অ্যাপসটির সঙ্গে যুক্ত হই। এর মধ্যে শুনি অ্যাপসটির অফিস পঞ্চগড়ে উদ্বোধন হচ্ছে। তাই দেখতে এসেছি। অ্যাপের কার্যক্রম বৈধ কি না, তা জানি না।
অ্যাপটির প্রতিনিধি কাবুল ইসলাম বলেন, আমাদের অপারেশন ডিরেক্টর ড্যানিশ ও ইউজিন। তারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তারা যে সিস্টেমে আমাদের আপডেট দিত সে ভাবে আমরা কাজ করি। আমরা পরিবার হয়ে কাজ করতাম। আজকে সেনাবাহিনীর সামনে এমন অবস্থায় পড়তে হবে এটা কল্পনাতে ছিল না। কাবুল আরো জানায়, আমরা মালয়েশিয়ান ক্যালি নামে এক মেয়ের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারি। তার মাধ্যমে এ প্লাটফর্মে আসা। শরিফ নামের একজন বাংলাদেশে প্রথম এ অ্যাপের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। এর বাইরে কারো সঙ্গে কোনো পরিচয় বা দেখা নেই।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার ক্যাপ্টেন ইনজামাম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি ২০-২৫ জনের একটি দল ক্রিপ্টোকারেন্সি বা বিটকয়েন অ্যাপের মাধ্যমে এখানে এসে টাকা লেনদেন করছে। এ লেনদেনটি আমাদের জানা মতে বৈধ না। আর ক্রিপ্টোকারেন্সি বা বিটকয়েন বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত নয়। তাই ঘটনাস্থলে এসে সত্যতা পেয়ে অ্যাপসটির সঙ্গে যুক্ত থাকা তিনজনকে আটক করেছি।
দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তাদেরকে আদালতে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে।