স্টাফ রিপোর্টার, বান্দরবানে: বান্দরবানে সনাতনী হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী ও পুরুষেরা প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এ সময় আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রতিবাদ জানায়। এ ঘটনার প্রতিবাদে সনাতনী হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী পুরুষ ভক্ত বিভিন্ন ফ্যাস্টুন নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। শুক্রবার (১ নভেম্বর) বিকেলে ৩.৩০ টায় শহরের প্রেসক্লাবের সামনে জেলার সকল সনাতনী সংগঠনের ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। পরে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে সনাতনী নারী ও পুরুষেরা জয় শ্রী রাম, জয় শ্রী রাম ধ্বনিতে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের সামনে গিয়ে কর্মসূচীর সমাপ্ত করে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, সনাতন ধর্মালম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় নেতা ও আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানায়। দ্রুত এ মামলা প্রত্যাহারের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানায়। বক্তারা এ সময় আরো বলেন, দেশে কোন পট পরিবর্তন হলে সনাতনী ধর্মালম্বীদের ওপর নানাভাবে জুলুম ও অত্যাচার শুরু হয়ে যায়। আর এ সময়ে যারা সমাজে বিশৃঙ্খলা করছে তাদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। সনাতনীরা যাতে সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারে তার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা।
বক্তারা এ সময় আরো বলেন, বাংলাদেশ হিন্দু জাগরণ মঞ্চ এর উথাপিত ৮টি দাবি অবিলম্বে সরকারকে মেনে নেওয়ায় আহবান জানায়। দাবীগুলোর মধ্যে সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড আধুনিকায়ন, শারদীয় দুর্গাপূজায় ৫ দিনের ছুটি প্রদান, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রনয়ন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীত করা, সংখ্যালঘু নির্যাতনের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দোষীদের দ্রুততম সময়ে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান, ক্ষতিগ্রস্তদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনবার্সনের ব্যবস্থা করা, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংখ্যালঘুদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ এবং প্রতিটি হোস্টেলে প্রার্থনা কক্ষ বরাদ্দ করা, দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন এবং অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন যথাযথ বাস্তবায়ন করার জোর দাবি জানায়। চট্টগ্রামে চিন্ময় ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানায় বক্তারা।
গত বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাতে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ফিরোজ খান ইসকনের চিন্ময় কৃষ্ণসহ ১৯ জন অজ্ঞাত আরো ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ইসকনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও পুন্ডরীক ধাম মন্দিরের অধ্যক্ষ চন্দন কুমার ধর প্রকাশ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ চট্টগ্রামের হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক অজয় দত্ত, নগরীর প্রবর্তক ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলা রাজ দাশ ব্রহ্মচারীসহ আরো বেশ কয়েকজনের সনাতন ধর্মালম্বী নেতৃবৃন্দের নাম রয়েছে। এ মামলায় পুলিশ ২ জনকে গ্রেপ্তার করে।