স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশের অন্তরবর্তীকালীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে একটি গোষ্ঠী অপতৎপরতা চালাচ্ছে বিষয়টি জানিয়েছেন সরকারের তিন উপদেষ্টা। তারা জানান, অন্তর্বর্তী সরকারকে একটি বিশেষ পরিস্থিতির মধ্যে ফেলতে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টায় রাঙামাটি জেলার সেনানিবাসের প্রান্তিক হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিন উপদেষ্টা। এ সময় উপদেষ্টারা অনাকাঙ্ক্ষিত এ সংঘর্ষে যারা জীবন হারিয়েছেন তাদের জন্য গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন। তারা সকলে জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি, সহানুভূতি এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন। এ সময় তারা পার্বত্য অঞ্চলে সম্প্রীতি ও শান্তি বজায় রাখার দায়িত্ব স্থানীয় নেতাদের উপর বর্তায় উল্লেখ করে উপদেষ্টারা বলেন, এসব ঘটনা এড়াতে এখন থেকে যথাযথ দায়িত্ব পালন করবেন।
রাঙামাটিতে স্থানীয় জনগণ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা সভায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা হাসান আরিফ, স্বরাস্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব:), পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, পুলিশের আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম, চট্টগ্রাম ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. মাইনুর রহমান, রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শওকত ওসমান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান, পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
গত তিন দিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলায় ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত পাহাড়ি বাঙ্গালী সংঘর্ষ ঘটনার পর সেখানে পরিদর্শনে যান অন্তরবর্তীকালীন সরকারের তিন উপদেষ্টা। তাদের পরিদর্শনের বরাত দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় সফর করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিষয়ক উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। উপদেষ্টারা রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলা সদরে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, ব্যবসায়ী, বাণিজ্য সংস্থার প্রতিনিধি, মিডিয়া প্রতিনিধি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং জেলা পরিষদের প্রতিনিধিদের সাথে দেখা করেন। এ পরিস্থিতির হঠাৎ অবনতিতে কারণ ও অংশগ্রহণকারীর কথা শোনেন। অন্তরবর্তীকালীন সরকারকে একটি বিশেষ পরিস্থিতির মধ্যে ফেলতে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। সবাইকে পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। এ সময় এলাকায় কর্মরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ সংযম দেখাতে বলা হয়েছে। গত তিন দিনে ঘটে যাওয়া সমস্ত ঘটনা তদন্তের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে এবং অন্যায়কারীদের বিচারের আওতায় আনা হবে। ধর্মীয় উপাসনালয়ে কোনো হামলা বরদাস্ত করা হবে না। পরিস্থিতি নির্বিশেষে কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না এবং কেউ নির্দেশ অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে এবং প্রয়োজনে আহতদের চিকিৎসার জন্য সামরিক হাসপাতালের ব্যবস্থা করা হবে। সম্প্রীতি ও শান্তি বজায় রাখার জন্য গ্রাম/ ইউনিয়ন/ উপজেলা পর্যায়ে সকল সম্প্রদায়ের লোকদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করার ওপর জোর দিতে হবে।