জাতীয় ডেস্ক: বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী দায়িত্বে পঞ্চমবারের মতো শপথ নিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭ টায় শেখ হাসিনাকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন। এ শপথের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা টানা ৪র্থ মেয়াদে এবং মোট পঞ্চমবারের মতো বাংলাদেশের সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নিলেন। প্রধানমন্ত্রীর শপথের পর অন্য মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো: মাহবুব হোসেন শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। শপথ অনুষ্ঠানে সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, কূটনীতিক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ এবং প্রতিবার প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। এবারসহ ৫ বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার রেকর্ড করলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২২ আসনে জয়লাভ করে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এর আগে ১০ জানুয়ারি শপথ নেন নতুন সংসদ সদস্যরা। শপথ নেওয়ার পর আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা সর্বসম্মতিক্রমে দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তাদের সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত করেন। সংসদ নেতা হওয়ার পর বুধবার বিকেলে সংসদ সদস্যদের আস্থাভাজন ব্যক্তি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন। তিনি শেখ হাসিনাকে নতুন সরকার গঠনের আহ্বান জানান।
এরপর প্রধানমন্ত্রী তার মন্ত্রিসভা গঠন করেন এবং বুধবার সন্ধ্যায় মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীদের তালিকা নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন। রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী গঠিত মন্ত্রিসভায় সম্মতি জ্ঞাপন করেন। এরপর মন্ত্রিসভার ওই তালিকা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বুধবার রাতে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক ব্রিফিংয়ে তালিকায় থাকা ২৫ মন্ত্রী ও ১১ প্রতিমন্ত্রীর নাম প্রকাশ করেন। এরপর রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন ৩৬ জন মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীকে নিয়োগ দিয়েছেন মর্মে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
গত ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ ২৮ টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। এ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯ টি আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২৯৮টি আসনের ফলাফল প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে ২২২ আসনে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টি জয় পেয়েছে ১১ টি আসন। বাকি ৬৫ আসনের মধ্যে ৬২ টিতে জয় পেয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। আর জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ও কল্যাণ পার্টি পেয়েছে একটি করে আসন। এর মধ্যে গোলযোগের কারণে একটি আসনের ফল স্থগিত রাখা হয়েছে। দেশের বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি ও তাদের জোটসঙ্গী অন্যান্য রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তারা শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে।