স্টাফ রিপোর্টার, বান্দরবান: বান্দরবানে হাই কোর্ট রায়ের ভিত্তিতে স্থাপিত ২১ টি ইটভাটা বন্ধ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। ইটভাটা বন্ধ হলে বিভিন্ন উন্নয়নের কাজ ব্যহত হতে পারে। হুমকির মুখে পড়বে সরকারের হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ। নিরব আতঙ্কে ভুগছেন এ সব উন্নয়ন কাজের সাথে সম্পৃক্ত ঠিকাদার ও ইটভাটার সাথে জড়িত বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। এ প্রেক্ষিতে জেলা সদর ও অন্যান্য স্থানে প্রকৃতি ও পরিবেশকে বিবেচনায় রেখে হাই কোর্ট রায়ের ভিত্তিতে স্থাপিত ২১ টি ইটভাটা জনস্বার্থে চালু রাখার দাবি উঠেছে। ইটের সংকটে সরকারি উন্নয়ন কাজগুলো বাধাগ্রস্থ হবে এমনটা আশংকা প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।
ঠিকাদার কাজের সংশ্লিষ্টরা জানান, বান্দরবান জেলায় সীমান্ত সড়কসহ বর্তমানে হাজার কোটি টাকার সরকারি উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সরকারের হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজগুলো বাস্তবায়ন করছে। উন্নয়ন কাজগুলো সম্পন্ন করতে হলে এ সব ইটের বিকল্প কোন উৎস এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান নয়। স্থানীয় ইট ছাড়া এসব উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন কোনভাবে সম্ভব নয়। বর্তমানে সরকার নির্ধারিত মূল্যে স্থানীয় ইট সংগ্রহ করা যাচ্ছে। যদি এ সব ইটভাটা থেকে ইটের যোগান বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সরকার নির্ধারিত অর্থ দিয়ে কোন ভাবে উন্নয়ন কাজগুলো সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। এতে সবাইকে বহুমূখী সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে ইট কিনে এনে কাজ করতে হলে একেকটি ইটের দাম বর্তমান মূল্যের দ্বিগুন হবে। তারা আরও জানান, সাম্প্রতিক বন্যায় বিপুল পরিমান গ্রামীন সড়ক, আন্তঃ উপজেলা সড়কসহ অবকাঠামোগুলো মারত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ক্ষতিগ্রস্থ এসব সড়ক ও অবকাঠামো সংস্কার কাজ বাধাগ্রস্থ হবে। ইটভাটাগুলো বন্ধ হয়ে গেলে এ সব উন্নয়ন কাজ কিভাবে বাস্তবায়ন করা হবে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ সব উন্নয়ন কাজ অব্যহত রাখতে বাস্তবায়ন সংস্থাগুলো প্রকাশ্যে কিছু বলছে না। নিজেরা সরকারের এ সব উন্নয়ন সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন নিয়ে শংকিত।
ইটভাটার মালিকরা জানান, প্রকৃতি ও পরিবেশকে বিবেচনায় নিয়ে লোকালয় থেকে অনেক বাইরে এ সব ইটভাটা স্থাপন করা হয়। এছাড়া ভাটাগুলোকে কেন্দ্র করে ২০ হাজারের বেশি শ্রমিক, সাধারন মানুষ ও পরিবার জীবিকা নির্বাহ করে। এ সব কাজ অব্যাহত রাখার স্বার্থে ২০১২ সালের হাই কোর্ট প্রদত্ত রায়ের ভিত্তিতে বান্দরবানে বিভিন্ন স্থানে ২১ টি ইটভাটা উৎপাদন ও বিপনন করে যাচ্ছে। জেলা সদর ও অন্যান্য উপজেলায় স্থাপিত ইটভাটা জনস্বার্থে চালু রাখা প্রয়োজন রয়েছে। জেলায় ২১ টি ইটভাটায় প্রশাসনের সঠিক নজরদারি থাকলে পাহাড় কেটে মাটি সংগ্রহ করার কোন সুযোগ নাই।
বান্দরবান জেলায় ২০১২ সালে ২১ টি ইটভাটা হাই কোর্টের রায় অনুসারে উৎপাদন ও বিপনন কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। এ সব প্রতিটি ইটভাটা ভ্যাট, ইনকাম ট্যাক্স এবং ভূমি কর হিসেবে রাজস্ব খাতে ৮ লাখের বেশি টাকা সরকারী কোষাগারে জমা দেয়া হয়।