স্টাফ রিপোর্টার, বান্দরবান: বান্দরবানে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এলাকায় পরিস্তিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত থাকায় দীর্ঘ ৮ মাস পর রোয়াংছড়ি উপজেলার দুর্গম পাইক্ষ্যং পাড়ায় বম জাতিগোষ্ঠীর ৫৭ পরিবার নিজ গ্রামে ফিরেছে। পাইক্ষ্যং পাড়ার ৯৭ পরিবারের মধ্যে ৫৭ পরিবার ফিরে এসেছে। ফিরে আসা ৫৭ পরিবারকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও খাদ্য সহায়তা দিয়ে আশার আলো জ্বালিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সোমবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে পাইক্ষ্যং পাড়ায় চিকিৎসা সেবা ও খাদ্য সহায়তা দিয়েছে সেনাবাহিনী। রোয়াংছড়ি উপজেলা সদর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে দুর্গম পাইক্ষ্যং পাড়ায় বান্দরবান সদর জোনের সেনা সদস্যরা এ সহায়তা দিয়েছে। এ সময় সেনাবাহিনীর সদর জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান পিএসসি, উপ-অধিনায়ক মেজর এসএম মাহমুদুল হাসান, শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সদস্য ও বম সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি লালজার বম, সেনাবাহিনীর চিকিৎসা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন আসাদুল ইসলাম, রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল কালামসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সেনাবাহিনীর সদর জোনের অধিনায়ক জানান, ফিরে আসা পরিবারগুলোকে চিকিৎসা সহায়তা, শিশুদের শিক্ষা সামগ্রী, খাদ্য সহায়তাসহ নানা সহায়তা দেয়া হবে। সে সাথে এলাকায় নিরাপত্তা দিবে সেনাবাহিনী।
গত শনিবার (১৮ নভেম্বর) থানছি উপজেলা সদর ইউনিয়নের ১৭ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত ৯নং ওয়ার্ডে প্রাতা পাড়ার বম জাতিগোষ্ঠীর ১১ টি পরিবার নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ৪৮জন নিজ বাড়িতে ফিরেছে। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় দীর্ঘ ৮ মাস পর নিজ পাড়ায় ফিরেছে ৬৮ পরিবার। এর মধ্যে রোয়াংছড়ি উপজেলায় ৫৭ পরিবার ও থানছি উপজেলায় ১১ পরিবার। কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ’ সন্ত্রাসী তৎপরতার কারণে এ বিভিন্ন উপজেলা থেকে ১০ টি বেশি পাড়া থেকে ৩ শতাধিক পরিবার বিভিন্ন এলাকায় ও সীমান্ত এলাকা পালিয়ে যায়। সম্প্রতি শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সাথে কেএনএফ সরাসরি বৈঠকের পর ৪ টি বিষয়ে সমঝোতা হওয়ায় পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। এ শান্তি প্রক্রিয়ার ফলে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় দীর্ঘ আট মাস পর পালিয়ে যাওয়া বম জাতিগোষ্ঠীর পরিবারগুলো নিজ পাড়ায় ফিরতে শুরু করেছে।
রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলা ও বান্দরবানে রুমা, রোয়াংছড়ি, থানছি উপজেলার দুর্গম এলাকায় সশস্ত্র তৎপরতা শুরু করে কেএনএফ। এ সময় কেএনএফ গোপন আস্তানায় সমতলের জঙ্গিগোষ্ঠী জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার জঙ্গিদের প্রশিক্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ কারনে কেএনএফ ও শারক্বীয়া জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অভিযানে পাহাড়ে বিভিন্ন আস্তানা থেকে ৩৮ জন জঙ্গি ও কেএনএফ ১৭ সদস্যকে আটক করা হয়। এ অভিযানে কেএনএফ সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে সেনাবাহিনীর ৫ সদস্যসহ ২২ জন নিহত হয়।