আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অব্যাহত বিমান হামলা, স্থল লড়াই আর ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মাঝে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা ও ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধের সংবাদ পরিবেশন সাংবাদিকদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক করে তুলেছে। শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) তেল আবিবে কাজ শেষে হোটেলে ফেরার সময় সাংবাদিকদের গাড়িটি আটকায় পুলিশ। এ সময় গাড়িতে ছিলেন ইসরায়েলি সাংবাদিক মুহান্নাদ তুতুনজি, হাইথাম আবুদিয়াব ও তাদের বিবিসি অ্যারাবিক দলটি। তাদের গাড়িতে ‘টিভি’ লেখা সংবলিত স্টিকার ছিল। তা সত্ত্বেও তাদের গাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে নামানো হয়। এরপর গাড়ির ভেতর তল্লাশি চালানো হয় এবং তাদের দেওয়াল চেপে ধরা হয়। তারা নিজেদের বিবিসির সাংবাদিক পরিচয় দেন এবং পুলিশের কাছে তাদের পরিচয়পত্র দেখান। যখন তুতুনজি পুলিশের এ হয়রানির বিষয়টির ভিডিও করতে যান তখন তার ফোন কেড়ে নেওয়া হয় ও সেটি মাটিতে আছড়ে ফেলে ভেঙে ফেলা হয় এবং তার গলা চেপে ধরা হয়।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা তাদের একদল সাংবাদিককে মারধর করেছে ইসরায়েলি পুলিশ। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর তেল আবিবসহ বিভিন্ন শহরে সংবাদ সংগ্রহ ও সেগুলো প্রচারের কাজ করছিলেন বিবিসি এ সাংবাদিকরা। সাংবাদিকদের অবশ্যই স্বাধীনভাবে ইসরায়েল গাজা যুদ্ধ নিয়ে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। আমাদের বিবিসি অ্যারাবিকের একটি দলকে তেল আবিবে পাঠানো হয়েছে। স্পষ্টভাবে মিডিয়া লেখা সত্ত্বেও ইসরায়েলি পুলিশ তাদের গাড়ি আটকায় এবং হামলা করে। হামলার বিষয়ে কথা বলতে ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল বিবিসি।
সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বৈশ্বিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) বলেছে, ইসরায়েল সাথে ফিলিস্তিন যুদ্ধে এক সপ্তাহে অন্তত ১১ সাংবাদিক নিহত হয়েছে। নিহত সাংবাদিকদের মধ্যে ৯ জন ফিলিস্তিনি, ১ জন লেবানন এবং ১জন ইসরায়েলি বংশোদ্ভূত। এছাড়া যুদ্ধের সংবাদ সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি এক সাংবাদিক নিখোঁজ এবং আরও অনেকে আহত হয়েছে। চলমান যুদ্ধে গাজা উপত্যকায় অথবা এর কাছের এলাকায় নিহত, আহত এবং নিখোঁজ অন্যান্য সাংবাদিকদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক এ সংগঠন। সিপিজে বলছে, শুক্রবার লেবাননে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর গোলার আঘাতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের ১ জন ভিডিওগ্রাফার নিহত এবং আরও কমপক্ষে ৬ সাংবাদিক আহত হয়েছে। গাজার সাংবাদিকরা চলমান বিমান হামলার মাঝে সংবাদ সংগ্রহ এবং পরিবেশনে উচ্চ ঝুঁকির মুখোমুখি হয়েছে। সাংবাদিকদের সংবাদ সংগ্রহের সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সবপক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সুত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট, বিবিসি, আনাদোলু।