মো: তুহিন হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার, বান্দরবান: বান্দরবানে আওয়ামী লীগ নেতা মাহাবুবর রহমান স্থানীয় ও পাহাড়ী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দিয়ে তংকাবতী এলাকায় জায়গা দখলের অভিযোগ উঠেছে। পোয়া মাহাবু নামে পরিচিত মাহাবুবর রহমান জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক দায়িত্বে রয়েছে। পার্বত্য মন্ত্রীর ও আওয়ামী লীগ নেতার ক্ষমতা অপব্যবহার করে স্থানীয় ও পাহাড়ী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী মাধ্যমে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে ভূমি দস্যু পোয়া মাহাবু তংকাবতী ইউনিয়নে দক্ষিণ হাঙ্গর মৌজায় অন্যের জায়গা জবর দখল করে চলেছে। ভূমি দস্যু পোয়া মাহাবু প্রাণ নাশের হুমকিতে অসহায় ভুক্তভোগী অবসর প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুনীল কুমার চৌধুরী। গত ২২/০৪/২০২৩ তারিখে ভূমি দস্যু মাহাবুবর রহমান ও তার বাগানের কেয়ারটেকার আব্দুস সালাম আব্দুর বিরুদ্ধে বান্দরবান সদর থানায় অভিযোগ করেছে এ ঘটনার শিকার ও ভূক্তভোগী চট্টগ্রাম জেলায় লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়ার অবসর প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুনীল কুমার চৌধুরী।
থানায় অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সুনীল কুমার চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলায় পদুয়া ইউনিয়নে স্থায়ী বাসিন্দা। তিনি অবসর প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি লোহাগাড়া উপজেলা শাখার সভাপতি দায়িত্বে রয়েছে। পারিবারিক পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত বান্দরবান জেলার তংকাবতী ইউনিয়নে ৩০৯ নং দক্ষিণ হাঙ্গর মৌজা, ৪৮ নং ফ্রি সিম্পল লর্ড, হোন্ডিং নং- ১৪, খতিয়ান নং-০৮, এ খতিয়ান ভুক্ত ৬০ একর জায়গার মালিক সুনীল কুমার চৌধুরী। এ মালিকানা জায়গায় শিক্ষকতা পাশাপাশি ৩৫ বছর যাবত ফলদ ও বনজ বৃক্ষ রোপণ এবং মৎস্য চাষ করে ভোগ দখল করছে। বিগত সময়ে হঠাৎ ১১/১০/২০২২ তারিখে সুনীল কুমার চৌধুরীর তার নিজস্ব খতিয়ান ভুক্ত সৃজিত বাগান প্রায় ২৫ একর জায়গা জোর পূর্বক স্থানীয় ও পাহাড়ী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দিয়ে দখল করে পোয়া মাহাবু। এ ঘটনার বিষয়ে তাৎক্ষনিক তংকাবতী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে অভিযোগ করা হয়। এরপর গত ১৩/১২/২০২২ তারিখে পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে উভয়ের সম্মতিতে সীমানা নির্ধারন করে আপোষ মীমাংসা করা হয়। এর পরবর্তী সময়ে গত ২১/০৮/২০২৩ তারিখে ২য় বার আবার আওয়ামী লীগ নেতা মাহাবুবর রহমান ও তার বাগানের কেয়ারটেকার আব্দুস সালাম আব্দুর নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন স্থানীয় ও পাহাড়ী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী মিলে সুনীল কুমার সৃজিত বাগানের আরো প্রায় ৩ একর পরিমাণ জায়গা জোর পূর্বক দখল করেছে। পোয়া মাহাবু এভাবে একাদিক বার জায়গা দখল করতে গিয়ে সুনীল কুমার সৃজিত বাগানের কয়েক লাখ বৃক্ষ সম্পদ ক্ষতি করেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাকে প্রাণে হত্যা ও হাত পা ভেঙ্গে লাশ গুম করার হুমকি প্রদান করে ভূমি দস্যু পোয়া মাহাবু।
জানা যায়, বান্দরবানে তংকাবতী ইউনিয়নে ৩০৯ নং দক্ষিণ হাঙ্গর মৌজায় খতিয়ান ভুক্ত কোন বৈধ ভূমি দলিল নেই মাহাবুবর রহমান নামে। প্রসংগত উক্তি মতে মনিুষের আছে ২ টি হাত ডান হাত ও বাম হাত। এ ক্ষেত্রে বলা যায় ভূমি দস্যু হলে থাকে ৩ টি হাত ডান হাত, বাম হাত ও ওজু হাত। এ ওজু হাত হল শয়তানের হাত। এভাবে ওজু হাত দিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করেন ভূমি দস্যু পোয়া মাহাবু। বিগত ১৭/০২/২০২২ তারিখে ৩০৯ নং দক্ষিণ হাঙ্গর মৌজা, হোন্ডিং নং- ১৪, খতিয়ান নং-০৮, সুনীল কুমার চৌধুরী মালিকানাধীন তপশীলভুক্ত জায়গায় ২২ জনের নিকট হতে ক্রয় সূত্রে ২৫ একর জায়গা মালিকানা দাবি করে জোর করে দখলে যায় ভূমি দস্যু পোয়া মাহাবু। উক্ত ২২ জনের নিকট হতে পোয়া মাহাবু ক্রয় সূত্রে ২৫ একর জায়গার মালিক এ ক্রয়ের বিষয়ে তপশীলভুক্ত জায়গার মালিক সুনীল কুমার চৌধুরী অবগত নহে।
এ বিষয়ে আরো জানা যায়, সুনীল কুমার চৌধুরী মালিকানাধীন তপশীলভুক্ত জায়গায় ২২ জন বিভিন্ন ধরনের বাগান সৃজন পুর্বক ভোগ দখলে স্থিত ছিল। সে এ ২২ জনের কারো থেকে জায়গা বিক্রি করে নাই। এ ২২ জনের কারো থেকে জায়গা দলিল ছিল না। উক্ত ২২ জনের নিকট হতে পোয়া মাহাবু ক্রয় সূত্রে ২৫ একর জায়গার মালিক তা সঠিক নয়। এভাবে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি তার কাছের লোক পরিচয় দিয়ে ক্ষমতা দম্ভ দেখিয়ে ভিতি সৃষ্টি করে। আইন অমান্য করে আওয়ামী লীগ নেতার ক্ষমতা অপব্যবহার করে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দিয়ে অন্যের জায়গা জবর দখল করে ভূমি দস্যু পোয়া মাহাবু। আপর সহযোগী তার বাগানের কেয়ারটেকার আব্দুস সালাম আব্দু এলাকায় নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকার প্রমান রয়েছে। তাকে অপরের জায়গা দখলের জন্য প্রতিনিয়ত টাকার বিনিময়ে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ নেতা মাহাবুবর রহমান। এবাবে আইন অমান্য করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে তংকাবতী ইউনিয়নে দক্ষিণ হাঙ্গর মৌজায় ভূমি দস্যুপনা রাজত্ব গড়ে তোলে পোয়া মাহাবু।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা মাহাবুবর রহমান বলেন, তংকাবতী ইউনিয়নে দক্ষিণ হাঙ্গর মৌজায় ক্রয় সূত্রে মালিকানা ১৫০ একরের অধিক জায়গা রয়েছে। এ সব জায়গা অন্যেদের থেকে ক্রয় করেছি। আগের সমস্যা নিয়ে সুনীল কুমার চৌধুরীর সাথে জমির সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তি সংক্রান্ত অঙ্গীকার পূর্বক আপোষনামা হয়েছে। সে জায়গা বিক্রি করা টাকা নিয়েছে। এর পরে তার সাথে জায়গা সীমানা সমস্যা নেই। আমি জায়গা ক্রয় করেছি রিন্টু শীল থেকে। রিন্টু শীল জায়গা সীমানর সাথে সুনীল কুমারের সমস্যা থাকতে পারে। সুনীল কুমার চৌধুরী সদর থানায় অভিযোগ বিষয়ে তদন্ত করে পুলিশ প্রশাসন বলবে অভিযোগ সঠিক কি বেঠিক।