শিক্ষা ডেস্ক: বিনামূল্যের নতুন পাঠ্যবইয়ে যুক্ত হচ্ছে ২০২৪ সালের জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থান। আর ইতিহাস অংশে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী চরিত্র মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, অবিভক্ত বাংলার প্রথম প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান সেনাপতি এমএজি ওসমানী এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ১১ নম্বর সেক্টর কমান্ডার (পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি) মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। এছাড়া জাতীয় চার নেতাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রে জানা যায়, পাঠ্যবইয়ের ইতিহাস অংশে অতিকথন বাদ যাচ্ছে। আর যেসব বিষয়ে আগে ফোকাস কম ছিল সেসব বিষয় ফোকাস করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাঠ্যে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ বিশেষ গুরুত্ব পাবে। জুলাই অভ্যুত্থানের ইতিহাস তুলে ধরা হবে। প্রচ্ছদ ও পেছনের পাতায় জুলাই অভ্যুত্থানের দেয়াল চিত্র এবং লিখন যুক্তি হতে যাচ্ছে। জুলাই অভ্যুত্থানের ইতিহাস যুক্ত করা হতে পারে পাঠন অংশে। আর বাদ যাচ্ছে পাঠ্যবইয়ের পেছনের অলঙ্করণ এবং শেখ হাসিনার ছবি ও বাণী চিরন্তন। পরিমার্জনের মাধ্যমে বেশ কিছু পাঠ্যবইয়ে জুলাই আগস্ট অভ্যুত্থানের চেতনার প্রতিফলন থাকবে। পাঠ্যবই প্রণয়নে সময় কম পাওয়ায় অভ্যুত্থানের ঘটনা পাঠ্য হিসেবে রাখা সম্ভব না হলে অভ্যুত্থানের দেয়াল চিত্র ও দেয়াল লিখন রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাংলা, ইতিহাস, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বইয়ের মতো কিছু বইয়ের প্রচ্ছদে বা বইয়ের কোন অংশে এসব দেয়াল লিখন বা দেয়ালে আঁকা চিত্র যুক্ত করা হবে। এছাড়া এখন পাঠ্যবইয়ের পেছনের পাতায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যেসব ছবি, উদ্ধৃতি ও বাণী রয়েছে সেগুলো বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুন করে বাণী চিরন্তন যুক্ত হবে। বর্তমানে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। আর আগামী বছর চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালুর মধ্য দিয়ে মাধ্যমিক পর্যন্ত সব শ্রেণিতে তা চালুর কথা ছিল, যা স্থগিত করে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) জানায়, বর্তমানে নতুন শিক্ষাক্রম চলছে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে। তবে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নতুন শিক্ষাক্রমটি স্থগিত করে পুরোনো শিক্ষাক্রমে ফিরেছে। ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের সর্বশেষ সংস্করণ পরিমার্জন করে শিক্ষার্থীদের হাতে ২০২৪ সালের পাঠ্যবই তুলে দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রণীত পাঠ্যবইয়ে কিছু পরিমার্জন শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। অন্যদিকে চতুর্থ থেকে দশম শ্রেণির পাঠ্যবই নতুন পুরোনো শিক্ষাক্রমের আলোকে সবশেষ সংস্করণ পরিমার্জন করে দেওয়া হবে।
২০১২ সালে প্রণীত শিক্ষাক্রমের আলোকে ২০১৩ সালে পাঠ্যবই প্রণয়ন করে শিক্ষাক্রম চালু করা হয়েছিল। এ শিক্ষাক্রমের সর্বশেষ সংস্করণ ২০২২ এবং ২০২৩ সালের বই পরিমার্জন করা হবে।