ব্রেকিং নিউজ:

পার্বত্য চট্টগ্রাম ডেস্ক: খাগড়াছড়ি সদর ও দীঘিনালা উপজেলায় সেটেলার বাঙ্গালী ও পাহাড়ি দুই পক্ষের সংঘর্ষ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দীঘিনালার লারমা স্কয়ার এলাকায় বাজারে আগুন দেয় সেটেলাররা। এ সময় অর্ধশতাধিক দোকান পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় ৩ জন পাহাড়ি নিহত হয়। নিহত ব্যক্তিরা হলেন দীঘিনালায় ধনঞ্জয় চাকমা (৫০), সদরে রুবেল ত্রিপুরা (২৫) ও জুনান চাকমা (২০)। এ ঘটনায় আহত হয় ১৭ জন। এর মধ্যে ৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জেলা সদর ও বিকেলে দীঘিনালায় এ ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যৌথভাবে টহল দিচ্ছে।

            খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রিপাল বাপ্পী চাকমা জানান, জেলা সদর ও দীঘিনালা উপজেলা থেকে আসা ৯ জন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর বাইরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৪ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

            স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার ১৮/০৯/২০২৪ খ্রি: খাগড়াছড়িতে মো. মামুন নামে এক যুবক মোটর সাইকেল চুরি করে পলানোর সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিদ্যুৎ কুটির সাথে ধাক্কা লেগে অহত হয়। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডা: তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেটেলার বাঙ্গালী ও পাহাড়ি দুই পক্ষের বিরোধ দেখা দেয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে দীঘিনালা কলেজ এলাকা থেকে সেটেলার বাঙ্গালীরা বিক্ষোভ মিশিল বের করে। বিক্ষোভ মিশিল লারমা স্কয়ার অতিক্রম করার সময় সেটেলার বাঙ্গালী ও পাহাড়ি দুই পক্ষের সংঘর্ষ ঘটনা ঘটে। এ সময় লারমা স্কয়ার এলাকার বাজারে আগুন দেয়। এ ঘটনায় ৫০ টি বেশি দোকান পুড়ে যায়। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে ১ জন পাহাড়ি মৃত ও ৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। আহতদেরকে দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় দীঘিনালায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

            এজাহার সূত্রে জানা যায়: খাগড়াছড়ি সদর থানায় ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রি: তারিখে স্বামী মো: মামুনকে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগে মামলা করে তার স্ত্রী মুক্তা আক্তার। বিবাদী রাখা হয় ৩ জন মো: শাকিল (২৭), রফিকুল আলম (৫৫), দিদারুল আলম (৫০)। তাদের এক জনের ঠিকানা শালবন শাপলা মোড় ও অপর দুই জনের পানখাইয়া পাড়া। বাদী এজাহারে উল্লেখ করে স্বামী মো: মামুন একজন ফর্নিচার ব্যবসায়ী ও মা ফর্নিচার মালিক। ১৮/০৯/২০২৪ খ্রি: রাত ১২ টায় ২,৩ নং আসামীর নির্দেশে ১নং আসামী ও অজ্ঞাতনামা আসামীরা তার স্বামীকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। তারপরে জানতে পারে তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে তার লাশ হাসপাতালে আছে। এরপরে সে জানতে পারে ১৯/০৯/২০২৪ খ্রি: সকাল ৫ টায় আসামীরা দোকানের কর্মচারী শাহীনকে তুলে নিয়ে যায় ও বেদম পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। শাহীন এ মামলার ৪ নং স্বাক্ষী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

            খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান জানান, দীঘিনালা ও খাগড়াছড়ি সদরে সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে সমন্বিত টহল জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নেতাদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করা হচ্ছে।

            দীঘিনালা থানার পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল হক জানান, দুর্বৃত্তরা বাজারে আগুন দিয়েছে। আগুন নেভানোর কাজ চলছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

          

খবরটি 346 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন