স্টাফ রিপোর্টার, বান্দরবান: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আর বেশি দিন নেই। এ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রচারনায় ব্যস্ত আওয়ামী লীগ। বান্দরবান পার্বত্য জেলা সংসদীয় ৩০০ নং আসনে নির্বাচনী প্রচারনা জনসভায় ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এক সাথে ভিডিও কনফারেন্সে যোগে জামালপুর, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী ও চাঁদপুর নির্বাচনী প্রচারনা জনসভায় অংশগ্রহন করেন। বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকালে বান্দরবানে রাজার মাঠে আয়োজিত নির্বাচনী প্রচারনা জনসভায় কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দলের নেতা কর্মীদের তাদের নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে জনগণের দ্বারে দ্বারে গিয়ে নৌকায় ভোট চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বান্দরবান আসনে বিপুল ভোটে নৌকা প্রতীকের বিজয় প্রত্যাশা করেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগ দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে এবং দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে বিপুল ভোটে নৌকা প্রতীকের বিজয় অর্জন করতে হবে। দেশের যে উন্নয়ন করেছি এ উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। নির্বাচনের মাধ্যেমে ক্ষমতায় আসলে সে অগ্রযাত্রাটা ধরে রাখতে পারবে আওয়ামী লীগ। নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য আপনারা জনগণের দ্বারে যেতে হবে। দলের জন্য ভোট চাইবেন। জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচত করলে দেশ সেবা করার সুযোগ পাবে আওয়ামী লীগ। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ যে ইশতেহার দিয়েছিল তা বাস্তবায়ন করেছে। এবারে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করা হয়। ইশতেহারটি পড়ে এ ইশতেহার নিয়ে জনগণের কাছে যান ও নৌকায় ভোট চান। এ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জনগনের বিপুল ভোটে বিজয় অর্জন করবে। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টরে উন্নয়ন অগ্রগতি হয়েছে। আওয়ামী লীগ জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আবার জনগণের সেবা করার সুযোগ পাবে। জনগণের কাছে সেটা দাবি ও আকাঙ্খা। আওয়ামী লীগ গড়েতে তুলতে চাই ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ।
আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি রাজনৈতিক দল নয়, বিএনপি হচ্ছে একটি সন্ত্রাসি দল আর একটি দল (জামায়াত) হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের দল। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে হত্যা, গুম, খুন শুরু করে খালেদা জিয়া একইভাবে ক্ষমতায় এসে একই কর্মকান্ড করেছে। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর এক ধাপ অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। দুর্নীতি, হত্যা, গুম, খুন ধর্ষণ, হামলা, নির্যাতন, সন্ত্রাস, বোমাবাজি ও জঙ্গি লালন এমন কোনো বিষয় নেই বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন করেনি। এ কারণে বিএনপিকে ২০০৮ সালে দেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করে। ২০০৮ সালে বিএনপির জামায়াতের ২০ দলীয় জোট মিলে ৩০টি সিট পেয়েছিল। এরপর থেকে বিএনপি নির্বাচন বিরোধী কার্যকলাপ শুরু করে। বিএনপির জামায়াত জোট ২০১৪ সালে নির্বাচন বানচাল করার জন্য ২০১৩ সাল থেকে আগুন সন্ত্রাস শুরু করে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ। এবার জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নানারকম চক্রান্ত হচ্ছে। নির্বাচনের পরিবেশটা যাতে সুন্দর হয়, উৎসবমুখর হয়, প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। ভোটারদের ভোটে অংশগ্রহণে হবে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। ভোট চাওয়ার অধিকার যেমন প্রার্থীর আছে তেমনি ভোট দেওয়ার অধিকার জনগণের। জনগণের ভোট দেওয়ার সুন্দর পরিবেশ তেরি করে দিতে হবে। ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আসার সুযোগ করে দিয়ে যাতে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় সে দায়িত্ব নিতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, শেরপুর প্রান্তে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী। অপরদিকে বান্দরবানে রাজার মাঠে আয়োজিত নির্বাচনী প্রচারনা জনসভায় উপস্থিত ছিলেনি সংসদীয় ৩০০ নং আসনে এমপি প্রার্থী ও পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্যশৈহ্লা মারমা, জেলা ও উপজেলর আওয়ামী লীগের ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। জেলার ৭ টি উপজেলা থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করে।
গত ২০ ডিসেম্বর সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহ পরান (রহ.) মাজার জিয়ারত এবং সমাবেশের মাধ্যমে দলের নির্বাচনী প্রচারণার আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পর বরিশাল যাবেন ২৯ ডিসেম্বর বিকেল ৩ টায় জেলা শহরে এক নির্বাচনী জনসভায়। এর পর ৩০ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জ সফরে যাবেন গোপালগঞ্জ-৩ (টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া) আসনের জনসভায় ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা।