স্টাফ রিপোর্টার, বান্দরবান: বান্দরবানে লামা উজেলায় সরই ইউনিয়নে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন পরিচালিত কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ আবাসিক শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এবছর কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ থেকে এইচএসসি উত্তীর্ণ ৪২ জনের মধ্যে ২২ জন ছাত্র দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। আর ১৪ জন এখনো বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়েছে। এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে ৮ জন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ জন শিক্ষার্থী এবং বাকিরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে চান্স পাওয়া আবরার রাফির ছোট থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার খুব ইচ্ছে ছিল। সে অনুভুতি প্রকাশ করে বলে, এ সুস্পষ্ট মনছবি আমি দেখেছি আমার স্কুলে থাকা অবস্থায়। তাই আত্মবিশ্বাস নিয়ে পরিশ্রম করে গেছি।
একই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগে মেধা তালিকায় ভর্তি হয় অরবিশ চাকমা। সে অনুভুতি প্রকাশ করে বলে, আমি আগে থেকে লক্ষ্য ঠিক করেছিলাম আমি কোটা নয় মেধা তালিকায় ভর্তি হব এবং প্রভুর কৃপায় ও আমার স্কুলের প্রচেষ্টায় তাই পেরেছি।
চারুকলায় ড্রইং এন্ড পেইন্টিং বিভাগে চান্স পাওয়া ছাত্রের একজন ইয়াইয়ং ম্রো। জেলার আলীকদম উপজেলার দুর্গম এলাকা কুরুকপাতা ইউনিয়নের ক্রংলেং পাড়া থেকে যখন কোয়ান্টাম কসমো স্কুলে তার ভাই ভর্তি করিয়ে দিয়ে যায় তখন তার বয়স মাত্র ৫ বছর। বাবা মারা যাওয়ার পর মা ও চার ভাইবোনকে নিয়ে সংসার চালানো তার পক্ষে কষ্টকর হয়ে যায়। তার ছোট ভাইটিকে দূরের এ স্কুলে দিতে হয়েছিল। সে ছোট্ট ইয়াইয়ং এখন একজন প্রাণবন্ত তরুণ, স্কুলে থাকা অবস্থায় ভলিবলে সে আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতায় যেমন সাফল্য অর্জন করেছে, তেমনি ছবি আঁকা ও লেখাপড়ায় দিয়েছিল সমান মনোযোগ। তার কাছে অনুভুতি প্রকাশে জানা যায়, যেদিন সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে সেদিন তার এলাকায় সবাই খুব আনন্দ করেছে।
এছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হয় নাজমুল হাসান। আর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া ৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মিনহাজ উদ্দিন ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগে, শহিদুল্লাহ ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যায়, স্পোর্টস সায়েন্স ও ফিজিক্যাল এডুকেশনে ভর্তি হয় তালহা জুবায়ের, অম্রাসিং মারমা, থনওয়াই ম্রো ও বেনদিকার বম এবং পালি বিভাগে প্রাচুর্য চাকমা ও হ্লাথোয়াইছা চাক ভর্তি হয়।
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন পরিচালিত কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ আবাসিক শিক্ষা কার্যক্রম পার্বত্য অঞ্চলে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে পরিচালিত এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করে এপর্যন্ত ২ শতাধিক শিক্ষার্থী বুয়েট, মেডিকেল ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেয়েছে।