ব্রেকিং নিউজ:

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিগোষ্ঠী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) দাবি করেছে, তারা যে ট্রেনটি ছিনতাই করেছিল, সেখান থেকে ২১৪ সেনাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যাদের সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। গত ১১ মার্চ বেলুচিস্তানের বোলান জেলার মুশফাক নামে একটি পাহাড়ি এলাকায় ‘জাফর এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি ছিনতাই করে জঙ্গিরা। এরপর সেখানে প্রায় দুইদিন অভিযান চালায় পাকিস্তানের সেনা ও বিমানবাহিনী। এ সময় ৩৩ জঙ্গিকে হত্যা ও প্রায় ৩০০ জনকে উদ্ধার করার তথ্য জানায় তারা। শনিবার (১৫ মার্চ বেলুচ লিবারেশন আর্মির মুখপাত্র জিয়ান্দ বেলুচ) একটি বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, তারা ট্রেন থেকে ২১৪ পাক সেনাকে ধরে নিয়ে যান। তাদের মুক্তির জন্য আলোচনা শুরু করতে সেনাবাহিনীকে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আলোচনা না করায় ২১৪ জিম্মি সেনার সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, বেলুচ লিবারেশন আর্মি পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে যুদ্ধবন্দি বিনিময়ের জন্য ৪৮ ঘণ্টার সময় দিয়েছিল। যা দখলদার সেনাবাহিনীর জন্য তাদের সেনাদের রক্ষার শেষ সুযোগ ছিল। কিন্তু পাকিস্তান তার পুরোনো জেদ এবং সামরিক অহংকার প্রদর্শন করেছে। তারা শুধুমাত্র সিরিয়াস আলোচনা উপেক্ষা করেনি, সঙ্গে বাস্তবতার ক্ষেত্রে চোখ বন্ধ করে রেখেছিল। তাদের এ জেদের ফলাফল স্বরূপ ২১৪ জিম্মিকে হত্যা করা হয়েছে।

            সশস্ত্র জঙ্গি গোষ্ঠীটি দাবি করেছে, তারা সব সময় আন্তর্জাতিক আইন মেনে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। কিন্তু অহংকারের জন্য পাকিস্তান তাদের সেনাদের হারিয়েছে। পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছে বেলুচ লিবারেশন আর্মির সদস্যরা। এ জন্য তারা প্রায় পাকিস্তানের সেনা ও বিদেশিদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে থাকে। তবে গত ১১ মার্চ তারা বেসামরিক যাত্রীসহ আস্ত একটি ট্রেন ছিনতাই করে।

            এছাড়া পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানিয়েছেন, তারা ট্রেনের ৩৫৪ জিম্মি যাত্রীকে উদ্ধার এবং ৩৩ জঙ্গিকে হত্যা করেছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন বিএলএ অন্য যাত্রীদের জিম্মি করে নিয়ে গেছে এমন কোনো প্রমাণও নেই। তিনি দাবি করেছেন, সন্ত্রাসী দলটি অতিরঞ্জিত খবর প্রকাশ করছে। এ সেনা কর্মকর্ত আরও জানিয়েছেন, ৩৩ বিএলএ জঙ্গির বাইরে আরও ৩১ জন নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে ২৩ জন সেনা, তিনজন রেলওয়ের কর্মচারী এবং পাঁচজন হলেন সাধারণ যাত্রী। তিনি জানান, আফগানিস্তান ও ভারত এ জঙ্গিদের প্রশ্রয় দিচ্ছে। তবে দুটি দেশেই এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।

            এদিকে জাফর এক্সপ্রেস নামে যে ট্রেনটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে সেটির অনেক যাত্রী সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা বা কর্মচারী থাকতেন। তারা বেলুচিস্তানে যেতে বা আসতে ট্রেনটি ব্যবহার করতেন। এ কারণে এ ট্রেন লক্ষ্য করে এ আগেও হামলা চালিয়েছিল বেলুচ জঙ্গিরা।

সূত্র: রয়টার্স

খবরটি 42 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন