স্বাস্থ্য ডেস্ক: পৃথিবীতে মানুষ সেরা জীব। মানুষ সৃষ্টির পর থেকে দীর্ঘায়ূ লাভের ও অমরত্ব হওয়ার চেষ্টায় গবেষণার শেষ নেই। হাজার বছর ধরে মানুষের অমরত্ব লাভের চেষ্টার গবেষণার ফলাফল এখন পর্যন্ত শূন্য পর্যায়ে রয়েছে। তারপর থেমে নেই মানুষের অমরত্ব লাভের চেষ্টায় চলছে অনন্ত গবেষণা। অতি সম্প্রতি উন্নত স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিজ্ঞান মানুষের অমরত্ব লাভের চেষ্টায় গবেষণার ফলাফল আশার আলো দেখাচ্ছে। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলে তিনি ও তার দল তিন বছরের বেশি সময় ধরে এমন সব অণু খুঁজে বের করার জন্য কাজ করেছেন। যা বার্ধক্যকে বিপরীত দিকে ঘুরিয়ে দেয় এবং মানুষের শরীরের কোষকে পুনরুজ্জীবিত করে তুলতে পারে।
গবেষণার দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর মানুষের শরীরে বয়সের ছাপকে বিপরীত মুখী করে তরুণে পরিণত করতে পারে এমন একটি ওষুধ আবিষ্কারের দাবি করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। গবেষকরা এ ওষুধটিকে ‘ফাউন্টেন অব ইয়ুথ’ আখ্যা দিয়েছেন। যা এ ওষুধটি সেবনের ফলে বয়স্ক মানুষকে একেবারে তরুণদের মতো দেখা যাবে। মানুষের অমরত্ব লাভের চেষ্টায় এ ওষুধটি প্রয়োগে ব্যপক গবেষণা করছেন স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষকরা। হার্ভার্ডের এ গবেষকরা ছয়টি ‘রাসায়নিক ককটেল’ আবিষ্কার করেছেন। যা গত কয়েক বছর ধরে মানুষ ও ইঁদুরের ত্বকের কোষকে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে সতেজ করে তুলেছে।
গবেষক ডেভিড সিনক্লেয়ার বলেন, এখন আমরা দেখিয়েছি যে, সেটি রাসায়নিক ককটেল দিয়ে করা সম্ভব। সাশ্রয়ী মূল্যে মানুষের শরীরের পুনর্জীবন লাভের আরেকটি পদক্ষেপ এটি। প্রত্যেকটি রাসায়নিক ককটেলে পাঁচ থেকে সাতটি এজেন্ট রয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলো এজেন্ট মানুষের অন্যান্য শারীরিক এবং মানসিক রোগের চিকিৎসার জন্য পরিচিত। আমরা পূর্বে দেখিয়েছি যে, ভ্রূণের জিন চালু করতে জিন থেরাপি ব্যবহার করে বয়সের পরিবর্তন করা সম্ভব। তিনি বলেন, প্রেসক্রিপশনের কিছু ওষুধ যেমন ভ্যালপ্রোইক অ্যাসিড, ট্রানাইলসিপ্রোমিন এবং প্রামিপেক্সোল বেশ কয়েকটি ককটেলে পাওয়া যায়। আর এসব ওষুধ যথাক্রমে মানুষের খিঁচুনি, বিষন্নতা এবং পারকিনসন্সের চিকিৎসার জন্য সফলভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। ইঁদুর ও বানরের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তারা ছয়টি ‘রাসায়নিক ককটেল’ শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। যেগুলো এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে বার্ধক্যের লক্ষণগুলোকে ‘বিপরীত’ করতে পারে। অপটিক স্নায়ু, মস্তিষ্কের টিস্যু, কিডনি এবং পেশীর ওপর অধ্যয়নগুলো ইঁদুরের উন্নত দৃষ্টি এবং বর্ধিত জীবনকালের ব্যাপারে আশাব্যঞ্জক ফল দেখিয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিলে বানরদের দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয়েছে।
গত ২০২৩ সালের ১২ জুলাই বয়স বিষয়ক এজিং জার্নালে কেমিক্যালি ইনডিউসড রিপ্রোগ্রামিং টু রিভার্স সেলুলার এজিং শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়। মানুষের দীর্ঘায়ু ও জিনতত্ত্ব নিয়ে ২০১৯ সালে ‘লাইফস্প্যান’ নামের একটি বই লিখে তুমুল সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন জেনেটিক্সের এ অধ্যাপক।
সূত্র: নিউইয়র্ক পোস্ট, এনডিটিভি।