ব্রেকিং নিউজ:

ফিচার ডেস্ক: প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ নেতৃত্বাধীন সরকারের উৎখাত আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সিরিয়ার ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)। তারা দেশটির রাজধানী দামেস্কের দখল নিয়েছে। রোববার সিরিয়ার রাজধানীর দখল নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পতন ঘটেছে দুই যুগের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা শাসক বাশার আল-আসাদ। এদিন বিদ্রোহীরা দামেস্কে ঢুকে পড়ায় প্রাণ বাঁচাতে বিমানে করে পালিয়ে গেছেন তিনি। তবে তার গন্তব্য জানা না গেলে সিরিয়ার দুটি নিরাপত্তা সূত্র বলেছে, প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিমান দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে দেওয়া এক ঘোষণায় এইচটিএস বলেছে, স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদকে সিরিয়ার ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা হয়েছে। সব সিরীয় মুক্ত এবং স্বাধীন। সিরিয়া দীর্ঘজীবী হোক। বিদ্রোহী কমান্ডার ও এইচটিএস প্রধান আবু মোহাম্মদ আল-জোলানির নেতৃত্বে সরকার বিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর নভেম্বরের শেষ দিকে এ বিদ্রোহীরা অনেকটা আকস্মিকভাবে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোর দখল নেন। শহরটি দখলের দুই সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে দেশটির সরকারের পতন ঘটেছে। ইতোমধ্যে সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর অনেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। আবার অনেকে বিরোধীদের সঙ্গে দেশ গঠনের প্রক্রিয়ায় যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সিরিয়ায় আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছে হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)। ইসলামপন্থী এ সংগঠনটির সিরিয়ার ইতিহাস ও সংকটে জড়িত থাকার দীর্ঘ ইতিহাস আছে। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র এবং তুরস্কসহ অনেক দেশে এইচটিএস সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত।

            কারা এই হায়াত তাহরির আল-শাম: জাবাত আল নুসরা নামে ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠা হয় এ গোষ্ঠীটি। পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছিল জাবাত আল নুসরার। এর গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলেন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) নেতা আবু বকর আল-বাগদাদী। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে গৃহযুদ্ধে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ও প্রাণঘাতী ভূমিকা পালন করেছে হায়াত তাহরির আল-শাম। তবে গোষ্ঠীটি বিপ্লবের চেয়ে জিহাদি আদর্শকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে মনে করা হয়। ফ্রি সিরিয়া নামে বিদ্রোহীদের যে জোট গঠন করা হয়েছিল, সেখানে তাদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছিল। ২০১৬ সালে এ গোষ্ঠীর নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি প্রকাশ্যে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন এবং জাবাত আল নুসরাকে বিলুপ্ত করে নতুন সংগঠন তৈরি করেন। এর নাম রাখা হয় হায়াত তাহরির আল-শাম। পরবর্তীতে এ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে আরও কিছু ছোট ছোট গোষ্ঠী যুক্ত হয়। এইচটিএস সিরিয়ার উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশকে ক্ষমতার কেন্দ্র বানিয়েছিল কিছু সময়ের জন্য। তারা সেখানে স্থানীয় প্রশাসন চালু করেছিল। ইদলিবে এ গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। যা তাদের বৈধতা পাওয়ার চেষ্টাকে ম্লান করে দেয়। এছাড়া অন্য আরও কিছু গোষ্ঠীর সঙ্গে তিক্ত লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছিল তাহরির আল-শাম। ইদলিবের বাইরে তাদের উচ্চাভিলাষ সম্পর্কে তখন পরিষ্কার কিছু জানা যায়নি। এমনকি আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক নষ্টের পর তারা খিলাফতের চেয়ে সিরিয়ায় ইসলামি শাসনের চেষ্টা করেছে। আসাদকে নতুন করে চ্যালেঞ্জ করা কিংবা সিরিয়ায় আবার বড় ধরনের কোন সংঘাতের লক্ষণ তাদের দিক থেকে এ পর্যন্ত কম প্রকাশ পেয়েছে।

            সিরিয়ায় যুদ্ধ কেন: সিরিয়ার দাররা শহরে ২০১১ সালে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল। সে সময় সিরিয়ার সরকার ব্যাপক দমন পীড়ন চালালে সেটি আসাদ সরকারের পতনের আন্দোলনে পরিণত হয়। প্রতিবাদ বিক্ষোভ এবং দমন-পীড়ন দুটি বাড়তে থাকে। বিরোধী সমর্থকরা এক পর্যায়ে অস্ত্র হাতে তুলে নেন। এ সময় প্রেসিডেন্ট আসাদ এ আন্দোলনকে বিদেশি সমর্থিত সন্ত্রাসবাদ এ আখ্যা দিয়েছিলেন। শত শত বিদ্রোহী দল তৈরি হয়, বিদেশি শক্তিরা বিভিন্ন পক্ষ নিতে শুরু করে এবং আইএস ও আল-কায়েদার মতো উগ্রপন্থী জিহাদিরা জড়িয়ে পড়ে সিরিয়া সংঘাতে। সহিংসতা দ্রুত গতিতে বাড়তে থাকে এবং দেশটিতে পুরোপুরি গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এ যুদ্ধে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ নিহত ও প্রায় এক কোটি বিশ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হন। এর মধ্যে অন্তত ৫০ লাখ মানুষ বিদেশে শরণার্থী বা রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন।

            যেভাবে সফল অভিযান চালায় বিদ্রোহীরা: গত চার বছরে মনে হচ্ছিল সিরিয়া যুদ্ধ শেষ হতে যাচ্ছে। দেশটির বড় শহরগুলোতে বাশার আল-আসাদের শাসন ছিল। তবে কিছু অংশ তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। এর মধ্যে ছিল পূর্ব দিকে কুর্দি সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলো। এসব এলাকা সংঘাতের শুরু থেকে সিরিয়া রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে ছিল না। বিশাল সিরীয় মরুভূমি এলাকায় থাকা দলগুলো নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করছিল। আর উত্তর পশ্চিমের ইদলিব প্রদেশ জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর নিয়ন্ত্রণে ছিল। এইচটিএস ছিল ইদলিবের নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায়। তারা এবার আলেপ্পোতে হামলা করে বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে। কয়েক বছর ধরে ইদলিব ছিল যুদ্ধক্ষেত্র। কারণ সরকারি বাহিনী নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছিল। ২০২০ সালে রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে আসাদ সরকারকে সমর্থন দিয়ে আসছে। আর তুরস্ক বিদ্রোহীদের সমর্থন যুগিয়েছে। প্রায় চল্লিশ লাখ মানুষ সেখানে বাস করতেন। যার বেশিরভাগ বিভিন্ন শহর থেকে উদ্বাস্তু হয়েছে। আসাদ বাহিনী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করে। আলেপ্পো ছিল আরেকটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধক্ষেত্র। সেখানে বিদ্রোহীদের বড় পরাজয় ঘটেছিল। নিজের জয় নিশ্চিত করা বাশার আল-আসাদ শুধু তার দুর্বল সামরিক বাহিনীর ওপর নির্ভর করেননি। বরং তিনি আস্থা রেখেছিলেন রাশিয়ার বিমানশক্তি আর ইরানের সামরিক সহায়তার ওপর। এর মধ্যে হেজবুল্লাহ ছিল। লেবাননে ইসরায়েলের আক্রমণে হেজবুল্লাহর পরিণতি এবং সিরিয়ায় ইরানের সামরিক কমান্ডারদের ওপর ইসরায়েলি হামলা বিদ্রোহীদের আলেপ্পোর দিকে হঠাৎ যাত্রা শুরু করতে উৎসাহ যুগিয়ে থাকতে পারে। গত কয়েক মাসে ইসরায়েল ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে হামলা জোরদার করেছে। এর ফলে সিরিয়ায় থাকা হেজবুল্লাহ নেটওয়ার্কের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। তারা না থাকলে আসাদের বাহিনী হয়তো আরও আগে পরাজিত হতো।

            আরব বসন্তের শেষ স্বৈরশাসকের বিদায়:লিবিয়ায় মুয়াম্মার গাদ্দাফি… তিউনিসিয়ায় বেন আলি… ইয়েমেনে আলি আবদুল্লাহ সালেহ… মিসরে হোসনি মোবারক… আর এখন সিরিয়ার বাশার আল-আসাদ। মধ্যপ্রাচ্যের সকল শাসক যাদেরকে ২০১১ সালে আরব বসন্তের অংশ নেওয়া বিক্ষোভকারীরা স্বৈরশাসক অভিহিত করেন। আরব বিশ্বের এ স্বৈরশাসকরা এখন ইতিহাসের পাঠ্য বইয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। তবে আরব বসন্তের বাইরে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের শিকার হয়ে মারা যাওয়া ইরাকের সাদ্দাম হোসেন এখন ইতিহাসের পাতায়। বিক্ষোভকারীদের সবার লক্ষ্যবস্তুর মাঝে কেবল বাহরাইনের রাজা হামাদ বেঁচে গেছেন। অন্যদের মতো বিপ্লবী প্রজাতন্ত্র নয়, বরং উপসাগরীয় আরব রাজতন্ত্রের প্রধান হওয়ায় অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন তিনি। আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে পাওয়া কিছু সংস্কার প্রস্তাব মেনে নেওয়ায় তিনি রক্ষা পেয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি নিরাপত্তা প্রতিবেদক ফ্রাঙ্ক গার্ডনারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ২০১১ সালে রাজা হামাদ বলেছিলেন, আমি সিরিয়ার পথে যেতে পারতাম। কিন্তু এর পরিবর্তে আমি জনতার দাবি শুনেছি। কেবল আংশিক দাবি মেনে নিয়েছি। তবে জুতসই গণতন্ত্র হওয়া থেকে এখন অনেক দূরে রয়েছে বাহরাইন। যা আপাতদৃষ্টিতে বাশার আল-আসাদের সিরিয়ার চেয়ে কিছুটা সুখী জায়গা। ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পাঁচ বছরের দীর্ঘ রাজত্বের সময় সন্ত্রাস আর সহিংসতার কারণে গণমাধ্যমের শিরোনাম দখল করেছিল গোষ্ঠীটি। তবে এখন পর্যন্ত সিরিয়ানদের ওপর সবচেয়ে বড় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে দেশটির সরকার। স্যুটেড-বুটেড বাশারের পেছনে জ্বালাময়ী পোস্টার, সঙ্গী-সাগরেদদের হাততালি, পার্লামেন্টের বাছাই করা সদস্যরা তার ভূগর্ভস্থ গুলাগ কারাগারের দেয়াল রক্তে ভিজিয়ে রেখেছিল।

            বাবার পথে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরেন আসাদ: আসাদ বাবা হাফিজ আল আসাদ প্রায় ৩০ বছর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ১৯৬৫ সালে বাশার আল-আসাদের জন্মের সময় সিরিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যে নাটকীয় ঘটনা ঘটেছিল। এ সময় মিসর ও সিরিয়া মিলে স্বল্পকালীন যে আরব প্রজাতন্ত্র করেছিল তা ভেস্তে যাওয়ার পর বাথ পার্টি ক্ষমতা দখল করে। অন্য আরব দেশের মতো সিরিয়াতে গণতন্ত্র ছিল না ও বহুদলীয় নির্বাচন হতো না। আঞ্চলিক রাজনীতিতে সেখানকার সব দেশে আরব  জাতীয়তাবাদ নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় ছিল। আসাদের পরিবার যে সম্প্রদায়ের ছিলেন তারা ছিলেন সিরিয়ার খুব অনগ্রসর একটি সম্প্রদায়। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তাদের অনেক সদস্য সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। হাফিজ আল-আসাদ সামরিক কর্মকর্তা থেকে উঠে আসেন। ১৯৬৬ সালে তিনি বাথ পার্টির সরকারে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হন। পরে দেশের প্রেসিডেন্ট হন ১৯৭১ সালে। এরপর ২০০০ সালে মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এ পদে বহাল ছিলেন। হাফিজ আল-আসাদের মৃত্যুর পর ২০০০ সালে মাত্র ৩৪ বছর বয়সে দ্রুত প্রেসিডেন্টের পদে আসীন হন বাশার আল-আসাদ। এজন্য দেশটির সংবিধানে প্রেসিডেন্টের সর্বনিন্ম বয়স ৪০ বছর থাকার যে বিধান ছিল তা পরিবর্তন করতে হয়। দায়িত্ব নিয়ে তিনি স্বচ্ছতা, গণতন্ত্র, উন্নয়ন, আধুনিকায়ন, জবাবদিহিতা ও প্রাতিষ্ঠানিক ভাবনার কথা বলেছিলেন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার কয়েক মাস পর তিনি আসমা আল-আখরাসকে বিয়ে করেন। তাদের তিন সন্তান হাফিজ, জেইন এবং কারিম। প্রথম দিকে তার রাজনৈতিক সংস্কার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ক বক্তব্য অনেককে আশাবাদী করেছিল। তার নেতৃত্বের স্টাইল ও পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত আসমার সাথে জুটিবদ্ধ হওয়া অনেককে স্বপ্ন দেখিয়েছিল। কিন্তু ২০০১ সালে নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপক দমন অভিযান চালায় ও বহু সোচ্চার কণ্ঠকে আটক করে। বাশার আল-আসাদ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সীমিত সংস্কার করলে ব্যক্তি খাত উৎসাহী হয়ে ওঠে। তবে তার শাসনের প্রথম দিকে উত্থান হয় তার চাচাতো ভাই রামি মাখলৌফের। তিনি সম্পদ আর ক্ষমতার সমন্বয়ে বিশাল ব্যবসা সাম্রাজ্য তৈরি করেছেন। তার সময়ে অনেকগুলো সামরিক অভ্যুত্থান হলে তা সফল হয়নি। বরং বিরোধীদের দমন ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে তিনি কঠোর হাতে দেশ শাসন করেন। বছরের পর বছর ধরে নিপীড়নের শিকার হওয়া বিদ্রোহীরা শেষ পর্যন্ত দেশটির রাজধানী দামেস্ক ঢুকে পড়েন এবং বাশার আল-আসাদ ব্যক্তিগত বিমানে করে অজানা গন্তব্যে চলে যান। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এর মাধ্যমে অবসান হলো সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের ৫৪ বছরের শাসনের।

খবরটি 279 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন