ব্রেকিং নিউজ:

ফিচার ডেস্ক: বিশ্বের সবচেয়ে সন্মানিত নোবেল পুরস্কার ২০২৪ বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। সোমবার (৭ অক্টোবর) থেকে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে চলতি বছর নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেছে। পর্যায়ক্রমে ৬ ক্যাটাগরির পুরস্কার ঘোষণা করে নোবেল কমিটি। গত ৭ অক্টোবর এদিন ফিজিওলোজি বা মেডিসিন ক্যাটাগরি পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে। এরপর ৮ অক্টোবর পদার্থবিদ্যার ক্যাটাগরি পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে। তারপর ৯ অক্টোবর রসায়ন ক্যাটাগরি পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে। রয়েল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স থেকে এ পুরস্কারটি ঘোষণা করা হয়। তারপর ১০ অক্টোবর এ দিন সাহিত্য ক্যাটাগরির পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে। তারপর ১১ অক্টোবর নোবেল পুরস্কার সবচেয়ে আকর্ষণীয় শান্তি ক্যাটাগরির পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে। নরওয়ের নোবেল ইনস্টিটিউট থেকে এ বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়। তারপর ১৪ অক্টোবর ৬ নম্বর এবং সর্বশেষ অর্থনীতি ক্যাটাগরির পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে এ বছর শেষ হয় নোবেল পুরস্কার ঘোষণা। সংস্থাটির ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী গত ৬ অক্টোবর ২০২৪ খ্রি: ৬ ক্যাটাগরির নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে সেটি জানিয়ে দিয়েছে নোবেল কমিটি।

            নোবেল পুরস্কারের জন্য প্রতি বছর ৩০০ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়। এরপর যাচাই বাছাই শেষে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে এ নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউট এ বছরের শান্তি পুরস্কারের জন্য মোট ২৮৬ জন প্রার্থীর নাম নিবন্ধন করেছিল। যার মধ্যে ১৯৭ জন ব্যক্তি ও সংস্থা ছিল ৮৯ টি।

            নোবেল পুরস্কার প্রদান কমিটির চেয়ারম্যান জ্যাকব স্ভেনসন বলেন, সর্বশেষ বিজয়ীদের নাম ঘোষণার সময় নোবেল অর্থনীতি বিভাগের ‘প্রতিষ্ঠানের গঠন এবং উন্নয়নে তার প্রভাব’ মূলত যে কোনো দেশের দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন সংক্রান্ত একটি গবেষণা। রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নতিতে প্রতিষ্ঠানের প্রভাব সম্পর্কে ড্যারন অ্যাকেমোগলু, সাইমন জনসন এবং জেমস রবিনসন তাদের যে অন্তঃদৃষ্টির পরিচয় দিয়েছেন তা গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান অর্থনৈতিক উন্নয়নের এগিয়ে যাওয়ার জন্য খুব উপযোগী। আর্থিক উপার্জনের দিক থেকে বিভিন্ন দেশের মধ্যে যে বিশাল পার্থক্য, সেটি দূর করা এ মুহূর্তে আমাদের কঠিনতম চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে এ নোবেল পুরস্কার বিজয়ীরা তাদের গবেষণায় সেটি আমাদের দেখিয়েছেন।

            ফিজিওলোজি বা মেডিসিন ক্যাটাগরি নোবেল পুরস্কার: ফিজিওলোজি বা মেডিসিন ক্যাটাগরি নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়। চিকিৎসা শাস্ত্রে অনবদ্য অবদান রাখায় এ ক্যাটাগরিতে এ বছর যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকুন। এ দুজন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। মাইক্রো আরএনএ আবিষ্কার এবং পোস্ট ট্রান্সক্রিপশন জিন নিয়ন্ত্রণ এ অবদান রাখায় তাদের এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

            ভিক্টর অ্যাবব্রোস ১৯৫৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যামশায়ারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে ম্যাসাচুয়েটস ইনস্টিটিউট থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়া ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত একই প্রতিষ্ঠানে পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ক্যামব্রিজ, ম্যাসাচুয়েটসের প্রধান গবেষক হন। বর্তমানে তিনি ম্যাসাচুয়েটস মেডিকেল স্কুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাচারাল সাইন্সের প্রফেসর দায়িত্বে কাজ করছেন।

            অপরদিকে গ্যারি রাভকুন ১৯৫২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮২ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন। তিনি ১৯৮৫ সালে ম্যাসাচুয়েটস জেনারেল হাসপাতাল এবং হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের প্রধান গবেষক হন। বর্তমানে এখানে জেনেটিকসের প্রফেসর দায়িত্বে কাজ করছেন।

            পদার্থবিদ্যার ক্যাটাগরি নোবেল পুরস্কার: পদার্থবিদ্যার ক্যাটাগরি নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়। পদার্থবিদ্যায় এ বছর সম্মানজনক এ পুরস্কার জিতেছেন জন হোপফিল্ড ও জিওফ্রে হিন্টন। কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্ক মেশিন লার্নিংয়ের মৌলিক আবিষ্কারের জন্য জন হোপফিল্ড ও জিওফ্রে হিন্টনকে এ বছর পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এ দুজন পদার্থবিদ্যা ব্যবহার করে এমন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন যা আজকের মেশিন লার্নিংয়ের ভিত্তি স্থাপন করেছিল। এর মধ্যে হোপফিল্ড এমন স্ট্রাকচার তৈরি করেছেন যেটি তথ্য সংরক্ষণ এবং পুনর্গঠন করতে পারে। অপরদিকে হিন্টন যে পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন যেটি স্বাধীনভাবে তথ্যের বৈশিষ্ট্য খুঁজে বের করতে পারে। যা বর্তমান বিশ্বে ব্যবহৃত বৃহৎ কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যদিও কম্পিউটার মানুষের মতো চিন্তা করতে পারে না। কিন্তু স্মৃতি এবং শেখার মতো কিছু জিনিস অনুকরণ করতে পারে মেশিন। পদার্থবিদ্যার মৌলিক ধারণা ও পদ্ধতি ব্যবহার করে এ দুজন এমন প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন যা নেটওয়ার্কের কাঠামো ব্যবহার করে তথ্য প্রক্রিয়াজাত করে।

            ১৯০১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ১১৮ বার পদার্থে নোবেল দেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে ২২৫ জন পদার্থবিদ এ পুরস্কার পেয়েছেন। এর মধ্যে জন বার্ডিন একমাত্র ব্যক্তি যিনি দুইবার এ পুরস্কার জিতেছেন। প্রথমবার ১৯৫৬ সালে এবং দ্বিতীয়বার ১৯৭২ সালে তিনি নোবেলে ভূষিত হন।

            রসায়ন ক্যাটাগরি নোবেল পুরস্কার: রসায়ন ক্যাটাগরি নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়। রসায়নে এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ডেভিড বেকার, ডেমিস হাসাবিস এবং জন জাম্পার। কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইন আবিস্কার এর জন্য ডেভিড বেকারকে এবং প্রোটিন স্ট্রাকচার প্রেডিকশনের জন্য ডেমিস হাসাবিস ও জন জাম্পারকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ প্রোটিনকে প্রাধান্য দিয়ে এ বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। নোবেল পাওয়া ডেভিড বেকার একেবারে নতুন ধরনের প্রোটিন তৈরি করেছেন। যা অনেকটা অসম্ভব বিষয় ছিল। অপরদিকে ডেমিস হাসাবিস এবং জন জাম্পার এমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরি করেছেন যা দিয়ে ৫০ বছরের পুরোনো প্রোটিনের জটিল কাঠামো অনুমান করার সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হয়েছে।

            এবারের নোবেল বিজয়ীরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও গণনার মাধ্যমে প্রোটিনের পুরো বিষয়টি খোলাসা করেছেন। যা সব রসায়নবিদের স্বপ্ন ছিল। আর এ স্বপ্ন এখন সত্যি হওয়ার দ্বারপ্রান্তে আছে।   ডেভিড বেকার যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। অপরদিকে ডেমিস হাসাবিস এবং জন জাম্পার যুক্তরাজ্যের নাগরিক।

            সাহিত্য ক্যাটাগরি নোবেল পুরস্কার: সাহিত্য ক্যাটাগরি নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়। সাহিত্য জগতে অনবদ্য অবদান রাখায় এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার লেখিকা হান কাংক। এ পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে সুইডিশ অ্যাকাডেমি। হান কাংক তার ‘গভীর কাব্যিক গদ্যের’ জন্য নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। তার এসব সাহিত্যকর্মে পূর্বের যুগে সাধারণ মানুষের ওপর হওয়া অত্যাচার, নির্যাতন এবং মানবজাতির ভঙ্গুরতার বিষয়টি উঠে এসেছে।

            হান কাং ১৯৭০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার গুয়াঞ্জুতে জন্মগ্রহণ করেন। ৯ বছর বয়স হওয়ার পর পরিবারের সঙ্গে রাজধানী সিউলে চলে আসেন তিনি। তার পরিবার সাহিত্যের সঙ্গে জড়িত ছিল। তার বাবা ছিলেন একজন প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক। এছাড়া গান ও সংস্কৃতির প্রতি নিজেকে মেলে ধরেছিলেন হান কাং। যা তার সাহিত্যকর্মে ফুটে উঠেছে। দক্ষিণ কোরিয়ান এ লেখিকার সবচেয়ে আলোচিত সাহিত্যকর্ম হলো (২০০৭; দ্য ভেজেটেরিয়ান, ২০১৫)। এটি তিন খণ্ডে লেখা হয়েছে। এটিতে এক নারীর গল্প তুলে আনা হয়েছে। যিনি মাংস খেতে অস্বীকৃতি জানানো পর কীভাবে তার স্বামী, বাবা এবং অন্যান্যদের দ্বারা নিগ্রহের শিকার হয়েছেন সেটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ১৯০১ সালে সাহিত্যের প্রথম নোবেল পুরস্কারটি পান ঊনবিংশ শতাব্দির ফরাসি কবি ও প্রাবন্ধিক সুলি প্রুদোম। এখন পর্যন্ত ১২০ সাহিত্যবিদকে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে।

            শান্তি ক্যাটাগরি নোবেল পুরস্কার: শান্তি ক্যাটাগরি নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছে জাপানের সংগঠন নিহন হিদাঙ্কিও। হিবাকুশা নামে পরিচিত এ সংগঠনটি পারমাণবিক অস্ত্র মুক্ত বিশ্ব অর্জনের প্রচেষ্টা এবং এ বিপর্যয়কে নিজের চোখে দেখে আসা প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান সবার সামনে তুলে ধরে পারমাণবিক অস্ত্র আর কখনও ব্যবহার করা উচিত নয় এমন প্রচরণার অবদানের জন্য এ পুরস্কার পেয়েছে।

            হিবাকুশা নামে পরিচিত এ সংগঠনটি হিরোশিমা এবং নাগাসাকির পারমাণবিক বোমা হামলায় বেঁচে যাওয়াদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি জাপানি সংস্থা। শান্তিতে নোবেল বিজয়ী তার নাম ঘোষণা করে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি। পরমাণবিক অস্ত্রবিরোধী বিশ্ব গড়ার প্রচেষ্টার স্বীকৃতি স্বরুপ জাপানের সংগঠনটিকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। মূলত নিহন হিদাঙ্কিও একটি পরমাণু অস্ত্র বিরোধী সংগঠন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিরোশিমা ও নাগাসাকির পারমাণবিক বোমা হামলায় যারা বেঁচে গিয়েছিলেন তাদেরকে নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে পরমাণু অস্ত্র বিরোধী প্রচারণা শুরু করে ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সংগঠন।

            ১৯৪৫ সালের আগস্টের পারমাণবিক বোমা হামলার প্রতিক্রিয়া ফলাফল বিশ্বব্যাপী একটি আন্দোলনের উদ্ভব হয়েছিল যার সদস্যরা পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিপর্যয়কর মানবিক পরিণতি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। ১৯০১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মোট ১১৪ বার নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। ১১১ ব্যক্তি ও ৩০ সংস্থা মিলে পুরস্কার বিজয়ীর সংখ্যা ১৪১। ১৯১৭, ১৯৪৪ ১৯৬৩ সালে রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটি তিনবার নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার দপ্তর ১৯৫৪ ও ১৯৮১ সালে দুইবার নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছে। এ ছাড়া নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে ২৭ স্বতন্ত্র সংস্থা।

            ২০১৪ সালে পাকিস্তানের শিশু অধিকারকর্মী মালালা ইউসুফজাই মাত্র ১৭ বছর বয়সে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান। যা কোনো সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার রেকর্ড অর্জন করেন।

            অর্থনীতি ক্যাটাগরি নোবেল পুরস্কার: অর্থনীতি ক্যাটাগরি নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়। এ বছর অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন তিন অর্থনীতিবিদ ড্যারন অ্যাকেমোগলু, সাইমন জনসন এবং জেমস রবিনসন। সুইডেনের রয়েল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস নোবেল বিজয়ী এ তিন অর্থনীতিবিদের নাম ঘোষণা করেছে। প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার প্রক্রিয়া এবং রাষ্ট্রের উন্নতিতে তার প্রভাব বিষয়ক গবেষণায় বিশেষ অবদানের জন্য এ তিন অর্থনীতিবিদকে এ বছর অর্থনীতির নোবেল দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের গঠন এবং উন্নয়নে তার প্রভাব মূলত যে কোনো দেশের দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন সংক্রান্ত একটি গবেষণা। রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নতিতে প্রতিষ্ঠানের প্রভাব সম্পর্কে ড্যারন অ্যাকেমোগলু, সাইমন জনসন এবং জেমস রবিনসন তাদের যে অন্তঃদৃষ্টির পরিচয় দিয়েছেন তা গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান অর্থনৈতিক উন্নয়নের এগিয়ে যাওয়ার জন্য খুব উপযোগী। আর্থিক উপার্জনের দিক থেকে বিভিন্ন দেশের মধ্যে যে বিশাল পার্থক্য, সেটি দূর করা এ মুহূর্তে আমাদের কঠিনতম চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে পুরস্কার বিজয়ীরা তাদের গবেষণায় সেটিই আমাদের দেখিয়েছেন।

            এ পুরস্কার বিজয়ী ড্যারন অ্যাকেমোগলু, সাইমন জনসন, জেমস রবিনসন তিনজন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। ড্যারন এবং সাইমন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) এবং জেমস রবিনসন শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন।

            ১৯৬৯ সাল থেকে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার প্রদান শুরু হয়। এ পুরস্কারের প্রকৃত নাম সেভারিগস রিক্সব্যাংক প্রাইজ। তবে আলফ্রেড নোবেলের স্মরণে পুরস্কারটি দেওয়া হয় এ জন্য এটি ‘অর্থনীতির নোবেল’ নামে বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত। শুরু থেকে সুইডিশ রয়েল একাডেমি এ পুরস্কার প্রদান করে আসছে। সে জন্য এবার ৬৬ তম নোবেল পুরস্কার পেলেন তারা। তিনজন এ পুরস্কারের ১০ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রাউন বা ১১ লাখ ডলার ভাগ করে নেবেন।

            ১৯০১ সাল থেকে প্রতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ নোবেল পুরস্কার দিয়ে আসছে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস। এ পুরস্কারটির নামকরণ করা হয়েছে সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নাম অনুসারে। ঊনবিংশ শতকের সুইডিশ বিজ্ঞানী শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিনামাইট আবিষ্কার করে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছিলেন। তিনি উইল করে গিয়েছিলেন যে তার যাবতীয় অর্থ থেকে যেন প্রতি বছর পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, শান্তি ও সাহিত্য এ ৫ টি ক্যাটাগরি খাতে বিশেষ অবদান রাখা ব্যক্তিদের পুরস্কার প্রদান করা হয়। সুইডিশ বিজ্ঞানী ও ডায়নামাইট উদ্ভাবক আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুর ৫ বছর পর থেকে তার নামে ও রেখে যাওয়া অর্থে প্রতি বছর এ নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। ১৯৬৯ সাল থেকে এ ৫ ক্যাটাগরি সঙ্গে যুক্ত হয় আর ১ টি ক্যাটাগরি অর্থনীতি। নোবেল পুরস্কারকে এ সব ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার বিবেচনা করা হয়।

খবরটি 294 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন