অর্থনীতি ডেস্ক: উচ্চ মূল্যস্ফীতি অব্যাহত থাকলে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে এ দাবি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ কারণে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের অন্যতম উপাদান নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে সরকারকে ব্যাংক থেকে আরও বেশি ঋণ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। অন্যদিকে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ। সব মিলিয়ে এবারও সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের ‘মনিটারি পলিসি স্টেটমেন্ট’ প্রকাশ করেছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। মূল্যস্ফীতি এখনও উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। এমন অবস্থায় মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে না পৌঁছানো পর্যন্ত বর্তমান সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বজায় থাকবে। পাশাপাশি চলতি অর্থবছর শেষে মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশ বা তার কাছাকাছি রাখার লক্ষ্য ঠিক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দীর্ঘদিন মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। বিশাল অংকের এ বাজেটের ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। আর অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ ২ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। বাজেটের আয়-ব্যয়ের বিশাল ঘাটতি পূরণে প্রধান ভরসাস্থল হিসেবে ব্যাংক খাত বেছে নিয়েছে সরকার। ফলে এবারও ঘাটতি পূরণে ব্যাংক ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ নেবে এ লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। এই অংক চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ হাজার ১০৫ কোটি টাকার বেশি। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে এক ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছিল সরকার। তবে সংশোধিত লক্ষ্য মাত্রায় এটি বাড়িয়ে এক ৫৫ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা ঠিক করা হয়।