বিশেষ খবর ডেস্ক: বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার চলমান সম্পর্ক আরো এগিয়ে নিতে মার্কিন প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করছেন। আর উভয়পক্ষ সম্পর্কের নতুন অধ্যায় শুরু করতে চায় বলে জানিয়েছন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা সফররত মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল এইলিন লুবাখারের নেতৃত্বে দেশটির একটি প্রতিনিধিদল পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠক শেষে সম্পর্ক উন্নয়নে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন তারা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কীভাবে আমাদের সম্পর্ক আরো গভীরতর করতে পারি এবং সম্পর্কের নতুন যুগ কীভাবে শক্তিশালী করতে পারি, সেটা নিয়ে আলোচনা করেছি। তারাও আমাদের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন করতে চায়। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে, নতুন অধ্যায়ে সম্পর্ক শুরু হোক। আমরাও চাই সম্পর্কে একটা নতুন অধ্যায় শুরু করতে। যেহেতু দুই দেশের ইচ্ছে আছে, এ সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ, গভীরতর উন্নয়নের মাধ্যমে আমাদের উভয় দেশ উপকৃত হবে।
মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা অনেকগুলো বিষয়ে আলোচনা করেছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের একটি বড় উন্নয়ন সহযোগী। গত ৫২ বছরের আমাদের পথচলায়, উন্নয়ন অভিযাত্রায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বড় ভূমিকা রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রেও অন্যতম। তাদের বিনিয়োগ নিয়ে আলাপ করেছি, সেটি কীভাবে বাড়ানো যায় সেটাও আলোচনায় ছিল। আমাদের উন্নয়ন অভিযাত্রায় তারা কীভাবে আরও বেশি সহযোগিতা করতে পারে, সেটি নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।
আলোচনায় রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ ছিল জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছি। রোহিঙ্গাদের কারণে যে নিরাপত্তা ঝুঁকি হয়েছে সেটি নিয়ে আলোচনা করেছি। তবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। রোহিঙ্গাদের যাতে সসম্মানে সব অধিকার নিয়ে ফেরত নেওয়ার বিষয়ে তারা একমত।
রাশিয়া-ইউক্রেন ও গাজা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, আন্তর্জাতিক ফোরামে আমরা অনেক ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করি, সেটা নিয়ে আলোচনা করেছি। গাজায় যুদ্ধ বিরতি কীভাবে কার্যকর করা যায়, সেটি নিয়ে আমাদের যে পজিশন সেটা তারা জানে, সেটা নিয়ে আলোচনা করেছি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যে আজকে আমাদের সবাইকে ভোগাচ্ছে সে বিষয়গুলো আলোচনা করেছি। যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত চাওয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
শ্রম অধিকার, গণতন্ত্র, মানবাধিকার বা নির্বাচন প্রসঙ্গে আলোচনার বিষয়ে মন্ত্রী জানান, এসব বিষয়ে আলোচনা হয়নি। বিএনপি এবং সুশীল সমাজের সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধিদলের বৈঠক নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি জানান ড. হাছান।
এদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক নিয়ে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস তাদের ফেসবুকে এক পোস্টে জানায়, যুক্তরাষ্ট্র একটি সমৃদ্ধ, নিরাপদ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে সমর্থন করে। আমরা বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি, যে আমাদের দুই দেশ কীভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, নিরাপত্তা, শরণার্থী, জলবায়ু, শ্রম এবং বাণিজ্যসহ পারস্পরিক স্বার্থে কাজ করতে পারে। বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।