আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতে বৃহত্তম নগদ অর্থ উদ্ধার অভিযান শুরু করে ইনকাম ট্যাক্স কর্মকর্তারা। যা দেশটির ইতিহাসে বৃহত্তম অর্থ উদ্ধার অভিযান। শুক্রবার থেকে ভারতের তিনটি রাজ্যে ইনকাম ট্যাক্স কর্মকর্তারা ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছেন। এ অভিযানে এখন পর্যন্ত নগদ ২৯০ কোটি রুপি উদ্ধার করা হয়। অপরদিকে কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্য ধীরাজ সাহুর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৩৫৩ কোটি রুপি। ভারতীয় আয়কর দপ্তর থেকে উদ্ধারকৃত অর্থের এ পরিমাণের তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। মোট ১৭৬ টি ব্যাগে এবং ৩ টি ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ এ অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে। গণনার জন্য আনা হয়েছিল ৪০ টি মেশিন। ৯ টি দল টানা ৫ দিন ধরে রুপি গোনার কাজ করেছে। এ দলে ২৪ জন কর্মকর্তাসহ ব্যাংক ও পুলিশ সদস্যরা ছিলেন।
কর বিভাগের সূত্র জানিয়েছে, অর্থের পরিমাণ আরও বাড়বে। কারণ যেসব অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলোর সব এখনো গণনা করা হয়নি। তারা আরও কয়েকটি জায়গা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। যেখানে অর্থ লুকিয়ে রাখা হয়েছে। কর বিভাগ ওড়িশা ভিত্তিক একটি চোলাই মদের কোম্পানির, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং পশ্চিম বঙ্গের অফিসে অভিযান চালিয়েছে। তিনটি স্থানের সাতটি রুম এবং নয়টি লকারে এখন পর্যন্ত তল্লাশি চালানো হয়নি। উদ্ধারকৃত নগদ অর্থগুলো ফার্নিচার, কাপবোর্ডসহ বিভিন্ন কিছুর ভেতর পাওয়া গেছে। সূত্রটি আরও জানিয়েছে, তারা আরও কিছু স্থানের সন্ধান পেয়েছেন যেখানে আরও নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার থাকতে পারে।
ভারতীয় চলচিত্র জগতে বেশ কয়েক বছর আগে অজয় দেবগনের ‘রেইড’ ছবিতে দেখা গিয়েছিল এমন চিত্র। একজন আয়কর কর্মকর্তা এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার বাড়িতে অবৈধ অর্থের খোঁজে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা উদ্ধার করেছিলেন। টাকা উদ্ধারের শ্বাসরুদ্ধকর কয়েকদিনের অভিযানের সে পটভূমি নিশ্চয় সিনেমা প্রেমীরা ভুলে যাননি। এবার সে সিনেমার কাহিনী যেন বাস্তবে ধরা দিলো ভারতের ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশায়।
১৯৭৭ সালে রাজনীতির জগতে পা রাখেন ধীরাজ। ধীরাজের ভাই শিব প্রসাদ সাহুও কংগ্রেস নেতা। দু’বার রাঁচী থেকে এমপি হয়েছেন। ধীরাজ স্নাতক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তার পরিবার ঝাড়খণ্ডের লোহার ডাগাতে থাকে। ২০১০ সালে প্রথমবার রাজ্যসভার এমপি হন ধীরাজ। ২০১৮ সালে দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৮ সালে রাজ্যসভা নির্বাচনের জন্য যে হলফনামা দিতে হয়েছিল ধীরাজকে, সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন, তার সম্পত্তির পরিমাণ ৩৪ কোটি ৮৩ লাখ রুপি। এছাড়া ধীরাজ জানিয়েছিলেন, ২০১৬-১৭ আর্থিক বর্ষে তার আয়ের পরিমাণ ছিল এক কোটি রুপি। ধীরাজের হলফনামা অনুযায়ী, তার নামে মোট দেড় কোটি রুপির চারটি গাড়ি রয়েছে। ৮৭ লাখ রুপির একটি বিএমডব্লিউ, ৩২ লাখ রুপির ফরচুনার, ২৪ লাখ রুপির রেঞ্জ রোভার, সাড়ে ৮ লাখ রুপির পাজেরো।
সূত্র: এনডিটিভি