স্টাফ রিপোর্টার, বান্দরবান: বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নে অবৈধভাবে পাহাড় কাটার দায়ে ২৩ টি ইটভাটার মালিককে ৩১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) ফাইতং ইউনিয়নে ২৩ টি ইটভাটায় পরিবেশ সংরক্ষন আইনে এ জরিমানা করা হয়েছে। পরিবেশ ও প্রতিবেশ ক্ষতিসাধন করায় পরিবেশ সংরক্ষন আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এর ৭ ও ১২ ধারায় ক্ষতিপূরণ আরোপ করে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চল। এ আদেশ প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে মর্মে সতর্ক করা হয়। পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) হিল্লোল বিশ্বাসের এর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন রকম অনুমতি না নিয়ে পরিবেশ ক্ষতি ও পাহাড় কাটার দায়ে পরিবেশ সংরক্ষন আইনে এফএসি ব্রিক্স এর মালিক ফরিদুল আলমকে ১ লক্ষ ২০ হাজার, এমএমবি ব্রিক্স এর মালিক ফরিদ আহম্মদকে ২ লক্ষ ২০ হাজার, সেভেনবিএম ব্রিক্স এর মালিক কবির আহম্মদকে ১ লক্ষ, এসএবি ব্রিক্স এর মালিক শাহ আলমকে ১ লক্ষ, রায়হান রিংকুকে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার, ইবিএম ব্রিক্স এর মালিক মোজাম্মেল হককে ১ লক্ষ ৩০ হাজার, বিএমডব্লিউ ব্রিক্স এর মালিক মো: মিজানকে ১ লক্ষ ৪০ হাজার, এমবিআই ব্রিক্স এর মালিক মাহমুদুল হককে ১ লক্ষ ২০ হাজার, কেবিসি ব্রিক্স এর মালিক মোস্তাক আহমদকে ১ লক্ষ, এমএইচবি ব্রিক্স এর মালিক আজিজ উদ্দিনকে ১ লক্ষ ২০ হাজার, এবিসি ব্রিক্স এর মালিক বেলাল হোসাইনকে ১ লক্ষ, এসএমবি ব্রিক্স এর মালিক হাবিবুর রহমানকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার, ওয়াইএসবি ব্রিক্স এর মালিক মহিউদ্দিনকে ১ লক্ষ, খায়রুদ্দিন মাস্টারকে ১ লক্ষ ২০ হাজার, বিবিএম ব্রিক্স এর মালিক এহসানুল হককে ১ লক্ষ ৫০ হাজার, ইউএমবি ব্রিক্স এর মালিক মোক্তার আহম্মদকে ১ লক্ষ ৭০ হাজার, ডিবিএম ব্রিক্স এর মালিক নাজেম উদ্দিনকে ১ লক্ষ ৮০ হাজার, ইউবিএম ব্রিক্স এর মালিক ওয়ালী উল্লাহকে ১ লক্ষ ৪০ হাজার, ইউবিএন ব্রিক্স এর মালিক মুজিবুল হককে ১ লক্ষ ২০ হাজার, এমবিএম ব্রিক্স এর মালিক মহিউদ্দিনকে ১ লক্ষ ৪০ চল্লিশ হাজার, ৩বিএম ব্রিক্স এর মালিক মোক্তার আহমদকে ১ লক্ষ ৮০ হাজার, এসবিডব্লিউ ব্রিক্স এর মালিক গিয়াস উদ্দিনকে ১ লক্ষ ৬০ হাজার, ৫বিএম ব্রিক্স এর মালিক জোনায়েদ ইসলামকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা।
জানা যায়, বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নে গত কয়েক বছরে অবৈধভাবে পরিবেশ ক্ষতি ও পাহাড় কেটে প্রায় ২৮ টি ইটভাটা স্থাপন করা হয়। তার মধ্যে ১০ টি আধুনিক পদ্ধতি ঝিকঝাক ইটভাটা রয়েছে। এ ২৮ টি ইটভাটার নেই কোন পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। পরিবেশ সংরক্ষন আইন অমান্য করে ফাইতং ইউনিয়নে অবৈধভাবে ব্যাপকভাবে পরিবেশ ক্ষতি ও পাহাড় কেটে ২৩ টি ইটভাটা কার্যক্রম শুরু করে। পরিবেশ ও প্রতিবেশ ক্ষতিসাধন করার প্রমাণ পাওয়ায় ২৩ টি ইটভাটার মালিককে পরিবেশ সংরক্ষন আইনে ক্ষতিপূরণ আরোপ করে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চল।
ফাইতং ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কবির খান বলেন, বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের জন্য আমরা এ ইটভাটাগুলো পরিচালনা করি। এ ইটভাটাগুলোতে প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার শ্রমিক কাজ করে। এ ইটভাটাগুলোতে কাজ করে ৫ শত উপরে পরিবারের মানুষ জনের আয় রোজগার হয়। পরিবেশ অধিদপ্তর এত টাকা জরিমানা করলে আমরা কিভাবে ইটভাটা পরিচালনা করবো। এ ইটভাটা করে কত টাকা এখানে লাভ হয়। এভাবে জরিমানা করতে থাকলে আমরা ভবিষ্যতে আর ইটভাটা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক (অ: দা) হিল্লোল বিশ্বাস বলেন, বান্দরবানের লামায় পরিবেশ ক্ষতি ও পাহাড় কাটার দায়ে ২৩ টি ইটভাটার মালিককে পরিবেশ সংরক্ষন আইনে জরিমানা করা হয়েছে। ফাইতং ইউনিয়নে ২৩ টি ইটভাটার নেই কোন পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। পরিবেশ ক্ষকি ও পাহাড় কেটে এধরনের ইটভাটা না করে আধুনিক পদ্ধতির ঝিকঝাক ইটভাটা তৈরী করার পরামর্শ দেয়া হয়। পরিবেশ রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া অবৈধভাবে ইটভাটা স্থাপন করলে পরিবেশ সংরক্ষন আইনে ক্ষতিপূরণ আরোপ করা হবে।
গত ২০২১ সালে বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নে অবৈধভাবে পরিচালিত ২৮ টি ইটভাটার মালিককে ১ কোটি ৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিল পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চল।